Saturday, July 18, 2020

ইনসুলিন এবং ইনসুলিন রেজিস্টেন্স আপনার দুর্বল স্বাস্থ্যের মূল বিষয়


যদি আপনি এমন কেউ হন যাঁর একটু বেশি ওজন এবং আপনার হাইপারটেনশন, এবং / বা উচ্চ রক্তচাপ থাকে তবে এটি কার্যত গ্যারান্টযুক্ত যে আপনার ইনসুলিন রেজিস্টেন্স রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রাপ্ত বয়স্কদের অর্ধেকেরও সম্ভবত ইনসুলিন রেজিস্টেন্স থাকে।আমাদের বাংলাদেশে এধরনের কোনো ডেটা না থাকলেও আমাদের পেটের দিকে তাকালে ও প্রেসারের ওষুধের ক্রমবর্ধমান বিক্রির ভয়াবহতায় ধারনা করা যায়, আপনার কাছেও এটি থাকতে পারে এবং হয়ত আপনি এটি জানেন না।
ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কী? ইনসুলিন রেজিস্টেন্স মূলত দুটি জিনিস। প্রথমত, আপনার দেহের কিছু কোষ, হরমোন ইনসুলিনের প্রতি খুব ভাল প্রতিক্রিয়া জানায় না। অর্থাৎ ইন্সুলিন কোষের উপর যথাযথ কাজ করতে পারে না। দ্বিতীয়ত, যে কোনো যুক্তিসংত কারনে আপনার দেহে আগের চেয়ে বেশি ইনসুলিন রয়েছে,  যা হাইপারিনসুলিনেমিয়া নামে পরিচিত।  
আপনার ইনসুলিন রেজিস্টেন্স বিষয়ে কেন যত্ন নেওয়া উচিত? আপনি ভাবতে পারেন, “যদি আমি এখনও এটি আমার মধ্যে লক্ষ্য না করে থাকি, তবে এটি আমার জন্য কোনও ব্যাপার না।“ কিন্তু আমরা আজ যেসকল  মারাত্মক রোগের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি ,যেমন টাইপ 2 ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, আলঝাইমার ডিজিজ এবং কিছু নির্দিষ্ট ক্যান্সারের মতো বিষয়গুলি যাদের প্রতিটির বিষয়ে একটি সাধারণ ঘটনা ঘটে, তা হ'ল ইনসুলিন রেজিস্টেন্স। ইনসুলিন রেজিস্টেন্স হয়ত এই সমস্যাগুলো সৃষ্টি করছে বা এটিকে আরও খারাপ করছে।   
আপনাকে সম্ভবত বলা হয়েছে, বা কমপক্ষে আপনি চিন্তাভাবনা করছেন, ঠিক আছে ... এটি কেবল,  কারণ আমি খুব বেশি খাচ্ছি এবং আমি খুব কম ব্যায়াম বা exercise করছি। ঠিক আছে, মেনে নেয়া গেলো যে, ব্যায়াম এবং কম খাওয়া এখনও সাহায্য করেছে, আর আমরা গত ৫০ বছর ধরে একই কথা বলছি এবং মনকে বুঝাচ্ছি। এতে তো আমাদের স্বাস্থ্যগত উন্নতি হবার কথা। কিন্তু কোথায়? এত ব্যায়াম আর ক্যালরী রেস্ট্রিকশন তো আমাদের ওজন কমাতে পারছে না, নন-কমিউনিকেবল ডিজিস অর্থাৎ স্ট্রোক, হার্ট এটাক, ডায়াবেটিস, পারকিন্সন্স, আলঝাইমার ডিজিস, উচ্চ রক্তচাপের হার কমাতে পারছেনা, এমনকি আমরা আগের চেয়ে আরও অসুস্থ ও মোটা। এবং তাই, এখন সময় কিছুটা আলাদাভাবে দেখার, চিন্তা শুরু করার সময় এসেছে। অবশ্যই চিন্তা করতে হবে, বিশেষতঃ যখন আমি নিজেই এই রোগের সাথে লড়ছি বা এর কাছাকাছি চলে এসেছি।
ভালো মত বুঝুন, ইনসুলিন এবং ইনসুলিন রেজিস্টেন্স আপনার দুর্বল স্বাস্থ্যের মূল বিষয়। অথচ আপনি এটা সম্পর্কে এখনো উদাসীন, বা কিছু গতানুগতিক ধারনা আপনাকে উদাসীন হতে বাধ্য করেছে, যে ধারনাগুলোর অধিকাংশই ভুল। এখন আপনি  কি করতে পারেন?
প্রথমতঃ আপনাকে এ ব্যাপারে জানতে হবে  এবং দ্বিতীয়তঃ অন্যকে সচেতন করতে হবে।
আমার এই ব্লগ সাইট আপনাকে সাহায্য করবে ইনসুলিন এবং ইনসুলিন রেজিস্টেন্স সম্পর্কে জানতে ও কিভাবে এর থেকে বাঁচবেন, তার উপায় জানতে। ব্লগ গুলো একে একে পড়ে ফেলুন, ভিডিও গুলো ধীরে ধীরে দেখে ফেলুন। প্রশ্ন থাকলে ইনবক্স করুন। 




Thursday, July 9, 2020

ডায়াবেটিস থেকে কিভাবে চিরমুক্ত হবেন

এটি আপনার জন্য আমার নতুন ভিডিও (অডিও ক্লিপ)। সাবধানতার সাথে একটু সময় নিয়ে পুরোটা শুনুন এবং আশা করি আপনি আপনার ডায়াবেটিস নিরাময়ের জন্য একটি সূত্র পাবেন। আমি নিরাময়ের কথা বলছি, নিয়ন্ত্রনের নয়। 
এখানে আমরা অল্প কথায় বর্ণনা করেছি: কীভাবে টাইপ ২ ডায়াবেটিস নির্মূল করবেন, ইনসুলিন  রেজিস্টেন্সকে কীভাবে বিপরীত করবেন অর্থাৎ ভালো করবেন, আগের অবস্থায় নিয়ে যাবেন। ইনসুলিন  রেজিস্টেন্স পরিবর্তনযোগ্য এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিরাময়যোগ্য যদি আমরা ইনসুলিন  রেজিস্টেন্স এবং ডায়াবেটিসের প্রকৃত কারণটি বের করে  তাড়াতাড়ি চিকিত্সা করতে পারি। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হ'ল উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, ডিজলিপিডেমিয়া, ওবেসিটি, পার্কিনসনস ডিজিজ, আলজাইমার ডিজিজ, এমনকি কোভিড -১৯ এর মতো সমস্ত বড় বড় রোগের জননী !!!
ভাল খাবার, ভাল বিশ্রাম এবং ভাল ব্যায়াম: এই ৩ টি কাজ আপনার সমস্যা সমাধানে আপনাকে সহায়তা করতে পারে।
ভাল খাবার মানে আপনাকে চারটি জিনিস জেনে রাখা উচিত: ১. কী খাবেন, ২. কী খাবেন না, ৩. কখন খাবেন এবং ৪. কখন না খাবেন ( উপবাস)।
উদ্ভিজ্জ তেল, চাল, গম থেকে রুটি, চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয়, আলু, চিড়া, মুড়ি যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। স্থুলকার হলে ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকলে এগুলো পরিহার করাই ভালো যতক্ষন না আপনি আপনার কাংখিত লক্ষ্যে যেতে পারছেন।
ডিমের কুসুম, মাংস, মাছ, মাখন, ফল, সবুজ এবং রঙিন শাকসবজি খেতে বাঁধা নাই। জেনে রাখুন, ডিমের কুসুম বা ঘি-মাখন আপনার শরীরের চর্বি বাড়ায় না, তাই উচ্চ রক্তচাপে এটা কোনো বাঁধা নয়।আমি কি এটা পরিষ্কার করতে পেরেছি আপনার কাছে?
আপনার যেটুকু দরকার সেটুকু জল পান করুন। অর্থাৎ পিপাসা মিটাতে ও খাদ্যের চাহিদা মিটাতে যেটুকু পানি দরকার, সেটুকুই পান করুন।
সন্ধ্যা ৬-৭ টার মধ্যে আপনার ডিনার বা রাতের খাওয়া শেষ করুন। এটা খুব জরুরী। দেরী করে খেলা এবং খাওয়ার পর তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লে পেট মোটা হবে আর বিপাক প্রক্রিয়া নষ্ট হবে।
সকালের খাবার মাঝে মধ্যে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন, সকালে কিছুটা দেরি করে আপনার উপবাস ভাঙার চেষ্টা করুন, আস্তে আস্তে আপনার উপবাসের সময় বাড়িয়ে দিন।
লম্বা সময় উপবাসের দুটি বড় উপকারঃ ১। জমাকৃ্ত চর্বি ও গ্লুকোজ বের হবে, আপনি কাংখিত ওজন অর্জনে সফল হবেন, স্লিম হবেন, দুর্বলতা কেটে যাবে ২। কোষে জমা বর্জ্য পদার্থ পরিষ্কার হবে, যাকে আমরা বলি অটোফেজী ( Autophagy) ।
সমস্ত স্ন্যাকস এড়িয়ে চলুন। বার বার খাওয়াই আমাদের শরীরকে একদম শেষ করে দিয়েছে। আপনি নিশ্চয়ই আমার সাথে একমত যে, যে গাড়ির জ্বালানী তেল কম লাগে সে গাড়িই বেশি ভালো। আমাদেরকে আল্লাহ বানিয়েছেনই সবচেয়ে উত্তম আকৃতিতে। আমাদেরও জ্বালানী অন্য যে কোনো প্রানী থেকে কম লাগবে, এটাই স্বাভাবিক । সুতরাং বার বার খাবার কোনো দরকার নেই।  বার বার খাওয়া আমাদের অস্বাস্থ্যকর, ইনসুলিন প্রতিরোধী এবং চর্বিযুক্ত করে তোলে। হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) , ঈসা (আঃ) কিংবা বুদ্ধা , আপনি যাকেই অনুসরন করেন না কেন, তারা কিন্তু জাগতিক একটা ব্যাপারে এক ছিলেন আর তা হলো, উপবাস এবং কম খাওয়া।
রাতে ভাল ঘুম এবং প্রথম রাতের দিকে ঘুমানো উত্তম ওষুধ। ওষুধ ছাড়াই এটির জন্য চেষ্টা করুন তবে প্রয়োজনে মেডিটেশন ব্যবহার করা যেতে পারে।
গম থেকে বানানো রুটি এড়িয়ে চলুন কারণ এতে গ্লুটেন নামক প্রোটিন রয়েছে যা আপনার অগ্নাশয়ের বিটা কোষগুলিকে ধ্বংস করতে পারে যারা আপনার জন্য ইনসুলিন নিঃসরন করে এবং রক্তে শর্করার বৃদ্ধি থেকে বাঁচায়।
মানুষ বেশি খাওয়ার কারণেই রোগ গ্রস্থ হয়, এমনকি মারা যায়, নিয়ন্ত্রিত উপবাসের কারণে নয়। উপবাস থাকা খুব প্রাকৃতিক ব্যাপার এবং অটোফাজির মাধ্যমে আমাদের কোষ নিরাময় করার খুব পুরানো পদ্ধতি। আমি একসময় খাব, আর তারপরে কিছুসময় উপোস থাকব যেনো জমাকরা খাদ্য ব্যবহার করতে পারি, এটাইতো স্বাভাবিক । এর ব্যলেন্স দরকার।
আমরা যখন খাবার খাই, তখন আমরা খাদ্য সঞ্চয় করি, যখন আমরা উপবাস করি তখন আমরা সেই সঞ্চিত খাবারটি পুড়িয়ে ফেলি। এটি চর্বি এবং অতিরিক্ত গ্লুকোজ (গ্লাইকোজেন) বার্ন করার খুব প্রাকৃতিক উপায়।
সাধারণ ব্যায়াম অনুশীলন এবং পেশী গঠনের শরীরচর্চ্চা অনুশীলন আমাদের শরীরকে স্বাস্থ্যকর করে তোলে। উচ্চ তীব্রতা ব্যায়াম ( High Intensity exercise ) চর্বি পোড়ানোর ক্ষেত্রে উপবাসের সমান।
যুবকরা কিছু সময় উচ্চ তীব্রতা ব্যায়াম ( High Intensity exercise ) অনুশীলন করতে পারে, বয়স্ক এবং স্থুল লোকেরা সহজ ব্যায়াম অনুশীলন ( low intensity exercise, like walking) , যোগব্যায়াম (Yoga) এবং প্রসারিত ব্যায়াম ( Stretch exercise) অনুশীলন করতে পারেন।
আপনার সংকল্প আপনাকে ইনসুলিন রেজিস্টেন্স  এবং টাইপ 2 ডায়াবেটিস থেকে বাঁচাতে পারে।
আমি নিশ্চিত যে আমি যা বলছি তা বর্তমান সংস্কৃতিতে সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী। ডাক্তারদের কাছ থেকে আপনি এর বিপরীত শুনেছেন এতদিন ধরে। তবে আমার কথাগুলোর উপর সাম্প্রতিক সব প্রমাণ ( evidence based article) রয়েছে। হাজারো মানুষ এই পদ্ধতিতে সুফল পাচ্ছেন। সুতরাং কোনও দ্বিধা ছাড়াই আপনি কথাগুলো মেনে নিয়ে দয়া করে আপনাকে বাঁচান এবং অন্যদের বাঁচাতে কাজ শুরু করুন। অহেতুক তর্ক করে নিজের ক্ষতি করবেন না। জেনে রাখুন ,” আমরা তাই, যা আমরা খাই”।
আমি আবার বলছি যে, ইনসুলিন রেজিস্টেন্স  সম্পূর্ণরূপে আগের ভালো পর্যায়ে ফিরানো যায় এবং টাইপ 2 ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য।
দয়া করে এটি শেয়ার করুন (https://youtu.be/ky7PmCeTKoc), নিজেকে এবং আপনার প্রিয়জনকে বাঁচাতে কাজ করুন।

You can also read this post, this is for you