আজ আমরা কীভাবে কোনও ব্যক্তিকে প্রিডায়াবেটিক থেকে ডায়াবেটিক অবস্থায় যেতে বাধা দিতে সাহায্য করতে পারি সে সম্পর্কে কথা বলব। এটি একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ধারণা।
প্রিডায়াবেটিস এবং ডায়াবেটিসের মধ্যে পার্থক্য আপনার রক্তের গ্লুকোজ বা শর্করার সাথে সম্পর্কিত।
প্রিডায়াবেটিস মানে আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ প্রায় ১০০-১২৬ এবং A1C এর পরিমান ৫.৭-৬.৪% থাকে।
ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে আপনার রক্তের শর্করার পরিমাণ ১২৭ এবং তারও বেশি, এবং A1C ৬..৫ % বা তার বেশি হয়।
ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে আপনার রক্তের শর্করার পরিমাণ ১২৭ এবং তারও বেশি, এবং A1C ৬..৫ % বা তার বেশি হয়।
আমরা যখন ডায়াবেটিস টাইপ ২ সম্পর্কে কথা বলি তখন আমরা আপনার রক্তে চিনির উচ্চতা বা পরিমান নিয়ে কথা বলছি। একজন সুস্থ সাধারণ ব্যক্তির রক্তে শর্করার পরিমাণ প্রায় ৮০ মিগ্রা হওয়া উচিত। এটি আপনার সমস্ত রক্তে প্রায় ১ চামচ চিনির সমান। আপনার শরীর নিজেই এই চিনি তৈরি করতে পারে। এর জন্য আপনার কোনও চিনি খাওয়ার দরকার নেই। এমনকি কোনো শর্করা খাদ্যও খাবার প্রয়োজন নাই। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমরা গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২৫-৩০ টি চামচ চিনি পান করি (কার্বস সহ)।
১ প্লেট ভাতে ৯ থেকে ১৪ চামচ চিনি থাকে (নির্ভর করে কোন চাল কিভাবে রান্না করছেন)। ১ টা রুটিতে ৪ থেকে ৬ চামচ চিনি থাকে। বাকী হিসাব আপনার।
১ প্লেট ভাতে ৯ থেকে ১৪ চামচ চিনি থাকে (নির্ভর করে কোন চাল কিভাবে রান্না করছেন)। ১ টা রুটিতে ৪ থেকে ৬ চামচ চিনি থাকে। বাকী হিসাব আপনার।
ইনসুলিন একটি ফিল্টার হিসাবে কাজ করে যা রক্তকে অতিরিক্ত চিনি থেকে দূরে রাখে। শরীর রক্তে উচ্চ পরিমাণে চিনি চায় না। আপনার শরীর অতিরিক্ত চিনিটিকে অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মনে করে। কেননা চিনির সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক হল, এটা রক্তের নালীতে প্রদাহ বা Inflammation তৈরী করে, নালীর ভিতরের আবরন ক্ষয় করে ফেলে। এতে বক্তচাপ বেড়ে যাওয়া ছাড়াও ক্যালসিয়াম-কোলেষ্টেরল নালীতে জমা হতে সাহায্য করে, যার পরিনতি Atherosclerosis এবং পরবর্তীতে হার্ট এটাক বা স্ট্রোক। সে আরেক ভংকর গল্প, না হয় আরেকদিন বলবো।
যদি কোনও ব্যক্তি প্রচুর পরিমাণে শর্করা গ্রহণ করে এবং ঘন ঘন খান তবে তাদের প্রচুর পরিমাণে ইনসুলিন নিঃসরণ হতে পারে। এই ইনসুলিন চিনি কমাতে খুব কঠোর পরিশ্রম করে। তবে, উচ্চ মাত্রায় ইনসুলিন শরীরের জন্যও বিষাক্ত। তাই কোষ রিসিপ্টর ইন্সুলিন গ্রহন করতে চায় না, এটা তার একটা প্রোটেক্টিভ মেকানিজম বা আত্মরক্ষামুলক ব্যবস্থা। সুতরাং, আপনার শরীর প্রতিরোধ তৈরি করে ইনসুলিন হ্রাস করতে শুরু করে। একে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বলা হয়।
ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হবার পরোও যদি প্রচুর পরিমাণে শর্করা গ্রহণ করা হয় এবং ঘন ঘন খাওয়া হয়, তখনও শরীরকে রক্তে অতিরিক্ত শর্করাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়, তাই এটি চিনিকে একটি সাধারণ পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করার জন্য আরও বেশি করে ইনসুলিন উত্পাদন শুরু করে। এটি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে, অবশেষে, অগ্ন্যাশয় ক্লান্ত হয়ে পড়ে , আর পর্যাপ্ত ইন্সুলিন তৈরী করতে পারে না।
এই মুহুর্তে, আপনি যদি কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ এবং ঘন ঘন খাওয়া চালিয়ে যান তবে রক্তে শর্করার পরিমাণ আরও বাড়তে থাকবে। ইনসুলিন হ্রাস পাচ্ছে বলেই এটি ঘটে। সময়ের সাথে সাথে এটি ডায়াবেটিসে পরিণত হতে পারে। ইন্সুলিন রেজিস্টেন্স --> প্রি ডায়াবেটিস --> ডায়াবেটিস এই ঘটনা গুলো ঘটতে ব্যক্তিভেদে ৫ থেকে ৭ বছর বা আরো সময় লাগতে পারে। কিন্তু অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ এবং ঘন ঘন খাওয়ার বদ অভ্যাস ত্যাগ না করলে ঘটনাগুলো ঘটবেই এতে সন্দেহ করার কোনো কারন নাই। অনুরোধ রইলো নিজের উপর কেউ প্রয়োগ করার চেষ্টা করবেন না ( দেখি না কি হয়!!!)
এই সমস্ত ভংকর পরিস্থিতি এড়াতে আপনি শর্করাযুক্ত খাদ্য বাদ দিবেন অথবা এর উৎসকে বদলে ফেলতে পারেন এবং মাঝে মাঝে উপবাস (Intermittent Fasting ) শুরু করতে পারেন।
চিকিৎসকরা রক্তে শর্করার দিকে মনোনিবেশ করেন। তাই তারা আপনার গ্লুকোজ মাপেন। কিন্তু আপনার যদি ইনসুলিন রেজিস্টেন্স থাকে তবে এটা কি তারা মাপেন? মাপবেন কিভাবে, ইন্সুলিন রেজিস্টেন্স হলে তার লক্ষন বুঝাটাই কঠিন। ৯০ শতাংশ প্রিডায়াবেটিক লোক জানেনই না যে তিনি প্রিডায়াবেটিক। ডাক্তারের কাছে যাবেন কেনো তাহলে? It’s a silent killer, এটা একটা নিরব ঘাতক।
তবে একটা সহজ পরীক্ষার কথা বলতে পারি। প্লিজ দাঁড়িয়ে যান, যদি আপনি নীচের দিকে তাকান এবং আপনার পা দেখতে না পান তবে আপনার ইনসুলিন রেজিস্টেন্স আছে বা হচ্ছে ধারনা করে নিতে পারেন।
আপনি পা দেখেছেন কিনা কমেন্ট বক্সে লিখতে পারেন। সংকোচের কারন নেই, আমি আপনাদের সাহায্যে আস্তে পারি।
ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হবার পরোও যদি প্রচুর পরিমাণে শর্করা গ্রহণ করা হয় এবং ঘন ঘন খাওয়া হয়, তখনও শরীরকে রক্তে অতিরিক্ত শর্করাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়, তাই এটি চিনিকে একটি সাধারণ পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করার জন্য আরও বেশি করে ইনসুলিন উত্পাদন শুরু করে। এটি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে, অবশেষে, অগ্ন্যাশয় ক্লান্ত হয়ে পড়ে , আর পর্যাপ্ত ইন্সুলিন তৈরী করতে পারে না।
এই মুহুর্তে, আপনি যদি কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ এবং ঘন ঘন খাওয়া চালিয়ে যান তবে রক্তে শর্করার পরিমাণ আরও বাড়তে থাকবে। ইনসুলিন হ্রাস পাচ্ছে বলেই এটি ঘটে। সময়ের সাথে সাথে এটি ডায়াবেটিসে পরিণত হতে পারে। ইন্সুলিন রেজিস্টেন্স --> প্রি ডায়াবেটিস --> ডায়াবেটিস এই ঘটনা গুলো ঘটতে ব্যক্তিভেদে ৫ থেকে ৭ বছর বা আরো সময় লাগতে পারে। কিন্তু অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ এবং ঘন ঘন খাওয়ার বদ অভ্যাস ত্যাগ না করলে ঘটনাগুলো ঘটবেই এতে সন্দেহ করার কোনো কারন নাই। অনুরোধ রইলো নিজের উপর কেউ প্রয়োগ করার চেষ্টা করবেন না ( দেখি না কি হয়!!!)
এই সমস্ত ভংকর পরিস্থিতি এড়াতে আপনি শর্করাযুক্ত খাদ্য বাদ দিবেন অথবা এর উৎসকে বদলে ফেলতে পারেন এবং মাঝে মাঝে উপবাস (Intermittent Fasting ) শুরু করতে পারেন।
চিকিৎসকরা রক্তে শর্করার দিকে মনোনিবেশ করেন। তাই তারা আপনার গ্লুকোজ মাপেন। কিন্তু আপনার যদি ইনসুলিন রেজিস্টেন্স থাকে তবে এটা কি তারা মাপেন? মাপবেন কিভাবে, ইন্সুলিন রেজিস্টেন্স হলে তার লক্ষন বুঝাটাই কঠিন। ৯০ শতাংশ প্রিডায়াবেটিক লোক জানেনই না যে তিনি প্রিডায়াবেটিক। ডাক্তারের কাছে যাবেন কেনো তাহলে? It’s a silent killer, এটা একটা নিরব ঘাতক।
তবে একটা সহজ পরীক্ষার কথা বলতে পারি। প্লিজ দাঁড়িয়ে যান, যদি আপনি নীচের দিকে তাকান এবং আপনার পা দেখতে না পান তবে আপনার ইনসুলিন রেজিস্টেন্স আছে বা হচ্ছে ধারনা করে নিতে পারেন।
আপনি পা দেখেছেন কিনা কমেন্ট বক্সে লিখতে পারেন। সংকোচের কারন নেই, আমি আপনাদের সাহায্যে আস্তে পারি।
এছাড়াও ইনসুলিন রেজিস্টেন্সের আরো লক্ষণ হতে পারে :
১। ঘন ঘন প্রস্রাব (এমনকি রাতেও)
২। মস্তিষ্ক কুয়াশা (brain fog), কথা ভুলে যাওয়া।
৩। এক্টু পর পর ক্ষুধা লাগা বা ক্ষুধার্ত না হয়ে বেশিক্ষণ যেতে পারে না।
৪। খাবার পরে ক্লান্ত লাগা।
৫। পা ঝি ঝি করা বা জ্বালা- পোড়া করা।
১। ঘন ঘন প্রস্রাব (এমনকি রাতেও)
২। মস্তিষ্ক কুয়াশা (brain fog), কথা ভুলে যাওয়া।
৩। এক্টু পর পর ক্ষুধা লাগা বা ক্ষুধার্ত না হয়ে বেশিক্ষণ যেতে পারে না।
৪। খাবার পরে ক্লান্ত লাগা।
৫। পা ঝি ঝি করা বা জ্বালা- পোড়া করা।
তাই, প্রিডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে বা যাদের প্রিডায়াবেটিস হয়েছে, তাদের যেন ডায়াবেটিস না হয় অথবা ইন্সুলিন রেজিস্টেন্সের পুর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে করোনীয় হলোঃ
১। শর্করার খাদ্য খুব কমিয়ে দিন, অথবা উতসকে বদলে নিন। আপনি ভাত, রুটি, চিড়া, মুড়ি, আলু, সরবত, ওটস বা বিস্কুটকে শক্তি বা শর্করার উতস হিসাবে না নিয়ে, সবুজ শাক-সব্জিকে উতস বানিয়ে নিন। সবুজ শাক-সব্জিতে প্রচুর শর্করা থাকে ( CO2 + H2O = C6H12O6 + O2 )
তবে এই শর্করা আপনার গ্লুকোজ তেমন বাড়াবে না, কেননা এতে প্রচুর আশ থাকে।
তবে এই শর্করা আপনার গ্লুকোজ তেমন বাড়াবে না, কেননা এতে প্রচুর আশ থাকে।
২। সবিরাম উপবাস ( Intermittent Fasting) শুরু করুন। আমি নিজে পছন্দ করি ১৬/৮ অর্থাৎ ৮ ঘন্টা খাবেন, ১৬ ঘন্টা উপবাস থাকবেন। ধরুন রাত আট টায় খাওয়া শেষ করলেন, তারপর রাতে খাবেন না, সকালে নাস্তা করবেন না, একদম দুপুর ১২ টায় উপবাস ভাংবেন। ভয় পাচ্ছেন? একবার করেই দেখুন, আপনার জমানো গ্লুকোজ আর চর্বিই আপনাকে শক্তি দিবে। উপবাস অবস্থায় আপনি ইচ্ছে করলে পানি বা লাল / সবুজ চা চিনি ছাড়া পান করতে পারবেন। ভয় পেলে শষা বা বাদাম খেতে পারেন। কি এখনো ভয় পাচ্ছেন? ঠিক আছে প্রথমদিকে একটা ডিম না হয় খেয়ে নিন। ভয় কেটে গেলে, এটা বন্ধ করে দিবেন। ডিমে প্রেসার বাড়ার ভয় করছেন? একদম না, ডিমে ব্লাডপ্রেসার বাড়ে না, পরে না হয় এটা নিয়ে আরেকটা অজানা নতুন গল্প বলবো।
৩। যাদের বয়স কম, তারা ঝাকা-নাকা ব্যায়াম (Hit exercise) করুন, যাদের বয়স বেশী বা বেশী দুর্বল, তারা যোগ ব্যায়াম বা ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম করুন। কিছু না পারলে, হাঁটুন তো। ঝাকা- নাকা ব্যায়াম ইন্সুলিন ছাড়াই কোষে গ্লুকোজ ঢুকাতে পারে।
৪। রাত না জেগে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর অভ্যাস করুন। ঘুম ভালো না হলে স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যাবে, এতে করে ইন্সসুলিন ও বেড়ে যাবে। যাদের ঘুম হয় না, তারা ঘুমানোর আগে মোবাইল অফ করুন, লাইট নিভান, কালো এক টুকরো কাপড় চোখের উপর রাখুন। ঘুমের দোয়া জানলে তা পড়ুন, না জানলে বলুন, আমি এখন ঘুমাচ্ছি। ঘুম না এলেও উঠবেন না, ঘুমের ভাণ ধরুন। ঘুম মানে নাক ডাকা না, ঘুম মানে স্বপ্ন দেখা না, চুপচাপ চোখ বন্ধ করে ঘন্টা চার-ছয়-আট অভ্যাস করা যাতে, চোখে আলো না ঢুকে, মুখ হতে কথা না বের হয়, এই অভ্যাসের নামই ঘুম। এর জন্য অনুশীলন দরকার হতে পারে, ওষুধের দরকার একদমই নাই।
৫। অনেকগুলো উপায় বলে ফেললাম , এখনো স্ট্রেসে আছেন? আরে ভাই, মরার পরে স্ট্রেস নিয়ে গবেষনা করার অনেক সময় পাবেন, সেটা অনন্ত কাল!! এখন একটু স্ট্রেস ফ্রি হনতো। দুদিনের জীবন, স্ট্রেস নিয়ে সময় নষ্ট করার মত এত সময় কই?
এই পাঁচের উপর অনুশীলন করুন, ইনশাআল্লাহ, আপনি প্রিডায়াবেটিক থেকেও বেঁচে যাবেন, ডায়াবেটিস তো অনেক দুরের কথা!!
No comments:
Post a Comment